তালহা মাহমুদ চৌধুরীর প্রথম উপন্যাস ‘জিস্ত-এ-দাগ’ প্রকাশিত

তরুণ লেখক তালহা মাহমুদ চৌধুরীর প্রথম উপন্যাস ‘জিস্ত-এ-দাগ’ প্রকাশিত হয়েছে। এটি পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের একুশে বইমেলায়। ঢাকার বইমেলায় উপকথা প্রকাশনের ৬৬৫ ও ৬৬৬ নম্বর স্টলে এবং চট্টগ্রামের বইমেলায় মুদ্রণশিল্প প্রকাশনের ১৩১ নম্বর স্টলে বইটি পাওয়া যাবে। এছাড়া, জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রকমারি থেকেও বইটি কেনা যাবে।

উপন্যাসটি মূলত দুটি কবিতার মধ্যকার বিবাদ, দুটি কবির দৃষ্টিভঙ্গি, জীবনসংগ্রাম ও সমাজের বাস্তবতা নিয়ে রচিত। চট্টগ্রামের সংস্কৃতি, কর্ণফুলী নদীর সৌন্দর্য, আঞ্চলিক ভাষার সংমিশ্রণ এবং সামাজিক বাস্তবতার নিখুঁত চিত্রায়ণের কারণে বইটি পাঠকমহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

প্রধান চরিত্র ‘দাগ’ ও ‘অরুণ’, যারা দুজনেই কবি। তাদের লেখার মধ্যে লুকিয়ে থাকা তাদের নিজেদের অতীত ও বর্তমান, শৈশবের স্মৃতি, দাম্পত্য কলহের প্রভাব এবং নিম্নবিত্তের ওপর নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ভাব ফুটে উঠেছে। উপন্যাসের অন্যতম আকর্ষণ হলো চরিত্রগুলোর সংলাপে চাটগাঁইয়া ও মিরসরাইয়ের আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার, যা গল্পকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে।

নিজের প্রথম উপন্যাস প্রকাশ প্রসঙ্গে লেখক তালহা মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “এই উপন্যাস আমার অনুভূতি, অভিজ্ঞতা ও চিন্তার প্রতিফলন। পাঠকরা যদি এতে নিজেদের খুঁজে পান, সেটাই হবে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন।”

বইটি প্রকাশের পর থেকেই পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আখ্যানগত দিক থেকে সাহিত্যে নতুন আঙ্গিক ও বিষয়বস্তুর ভিন্নধর্মী উপস্থাপনার কারণে বইটি ইতোমধ্যেই প্রশংসিত হচ্ছে।

উপন্যাসটির অনন্য দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ভাষাগত বৈচিত্র্য। লেখক গল্পে চট্টগ্রামের এবং মিরসরাইয়ের আঞ্চলিক ভাষাকে দক্ষতার সঙ্গে সংযোজন করেছেন, যা গল্পের চরিত্রগুলোর স্বতঃস্ফূর্ততা বাড়িয়েছে। এছাড়া, উপন্যাসে সমাজের বিভিন্ন স্তরের বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে নিম্নবিত্ত মানুষের সংগ্রাম এবং দারিদ্র্যের উত্থানপতনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

গল্পের অন্যতম আকর্ষণীয় দিক হলো চরিত্রগুলোর মানসিক গভীরতা। দাগ ও অরুণের মধ্যকার সম্পর্ক, তাদের চিন্তার পার্থক্য এবং একে অপরের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কাহিনির গতি নির্ধারণ করে। উপন্যাসে দাম্পত্য কলহ এবং পারিবারিক ভাঙনের অদেখা মানসিক প্রভাবও অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

এছাড়া, কর্ণফুলী নদীর পটভূমিতে গড়ে ওঠা দৃশ্যপট উপন্যাসের শৈল্পিক দিককে আরও দৃঢ় করেছে। লেখকের বর্ণনাভঙ্গি ও পরিবেশ চিত্রণের দক্ষতা পাঠকদের জন্য একটি বাস্তবধর্মী অভিজ্ঞতা এনে দেয়। পাঠকদের মতে, ‘জিস্ত-এ-দাগ’ শুধুমাত্র একটি উপন্যাস নয়, বরং সমাজের বিভিন্ন স্তরের বাস্তবতাকে তুলে ধরার একটি চিত্রপট।