আনোয়ারায় ধরা ছোয়ার বাইরে ইয়াবা সম্রাট সাদ্দাম

এক সময়ে ছোটখাটো মুদির দোকান ব্যবসায়ী নিজেকে আত্মগোপন করে কক্সবাজার থেকে মাছ ধরার ফিশিং ট্রলার ও কার্গো গাড়িতে করে চট্রগ্রামে বিশাল ইয়াবার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে আসছে সাদ্দাম হোসেন (জুয়েল) নামে এক ইয়াবা সম্রাট।

কয়েক বছর আগে সে বাড়ির পাশে বেড়িবাঁধের উপর একটি মুদির দোকান করে ইয়াবার ব্যবসায় জড়িয়ে আত্মগোপন হয়ে কক্সবাজারে দীর্ঘদিন করে আসছে এই মাদকের কারবার।এমনকি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলাও রয়েছে।

সাদ্দাম হোসেন উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মাধ্যম গহিরা বাঁচা মিয়া মাঝির বাড়ির মোহাম্মদ জাফর আহমদের ছেলে।তার বাড়ি উপকূলে হওয়ায় সাগরপথকে টার্গেট করে মাদক আনার একমাত্র উপায় হিসেবে পথে বেছে নেয়।

বর্তমানে সে চট্টগ্রামে আলাদা ফ্ল্যাট বাসা নিয়ে বসবাস করে।গ্রামেও রয়েছে বাড়ি এবং ইয়াবার টাকায় আনোয়ারা চাতরী চৌমুহনী এলাকায় নিজের নামে দেড় কোটি টাকায় জায়গা ক্রয় করে বলে এলাকায় গুঞ্জন আছে। দুটি মাছ ধরার ফিশিং ট্রলার ও একটি কার্গো গাড়ি বলে জানা যায়।তার হঠাৎ এত পরিবর্তন ও আলিশান জীবনযাপন এলাকায় অবাক করে দিয়েছে। মাদকের একাধিক মামলা ও মাদক ব্যবসার সম্পৃক্ততা পেয়ে পুলিশ ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার তার বাড়িতে অভিযান চালালেও আত্মগোপনে থাকায় গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয় প্রশাসন।

২০২১ সালে কক্সবাজার থেকে বিশাল ইয়াবার চালানসহ চেরাগী পাহাড় মোড় থেকে সাদ্দামকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।কিছু মাস জেল খেটে বের হয়ে আবারও প্রকাশ্যে ইয়াবার চালান খালাস করলে ২০২৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তার বাড়িতে র‍্যাব অভিযান করে ৫০ হাজার পিস ইয়াবাসহ তার ভাই আক্কাসকে গ্রেফতার করেছিল র‍্যাব-৭।সেই মামলায় সাদ্দামসহ এলাকার বেশ কয়েকজনের নামে মাদকের মামলা হয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিলো।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,কয়েক বছর আগে সাদ্দামের ইয়াবার একটি বড় চালান মহেশখালী থেকে বাশখালী হয়ে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়ার পথে তার পার্টনার নিজে নিজে গাড়ি ভেঙ্গে চুরি হয়ে গেছে বলে আত্মসাৎ করে আত্মগোপনে চলে যায়।পরে সাদ্দাম স্থানীয় এক ছাত্র নেতার সাহায্যে তাকে বেঁধে রেখে প্রচণ্ড মারধর করে স্বীকার করিয়ে ইয়াবা ফেরত নেয়।প্রশাসনের তালিকায় নাম থাকার পরেও কীভাবে প্রশাসনের নাকের ডগায় মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে প্রশ্ন এলাকাবাসীর।

রায়পুর ইউনিয়নের মাধ্যম গহিরা ০৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইয়াবা মামলার প্রত্যক্ষদর্শী মো. মহিউদ্দীন বলেন,সাদ্দাম হোসেন একসময় বেড়িবাঁধের উপর একটি মুদির দোকান করত,কিছু বছর আগে সে মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়ে হাজতে ছিল।২৩ সালের র‍্যাব অভিযান করলে তার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার পিস ইয়াবাসহ উদ্ধার করা মামলায় আমি সাক্ষী ছিলাম,যে মামলায় তার ভাই আক্কাস এক বছর কারাগারে ছিল এবং অন্য ওয়ার্ডের আজিজ নামে একজন একই মামলায় জেল খেটে এসেছিল।চাতরী চৌমুহনী এলাকায় জায়গা কিনেছে বলে আমিও শুনেছি।গহিরা ঘাটকুল এলাকায় পার্টনারশিপ হিসেবে তার একটি মাছের ট্রলার আছে।কয়েকমাস আগে এলাকায় দেখছিলাম।এলাকায় তেমন চোখে পড়েনা তাকে।তার ভাই আক্কাস, বর্তমানে বটতলী গুচ্ছগ্রামে বসবাস করে।সাদ্দাম এখন শহরে থাকে বলে শুনেছি।

আনোয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মনির হোসেন জানান,আমরা সবসময় মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স,সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদকের মামলা আছে।তার বাড়িতে একাধিকবার অভিযান চালালেও সে আত্মগোপনে থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছেনা।গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে। এবং তার সাথে যাদের মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ততা আছে তদন্ত করে তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।