বোরো ধানের শিষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ফসলের মাঠজুড়ে এখন সবুজের সমারোহ। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে দুলছে বোরো ধানের শিষ। সতেজ সবুজ পাতার ভেলায় ভাসছে কৃষকের বুকভরা আশা। মাঠের দৃশ্য যেন এক নিসর্গপটে আঁকা ছবির মতো।

কৃষকেরা বলছেন, আর কিছুদিনের মধ্যেই সবুজ গাছ ও কাঁচা শিষ রূপ নেবে সোনালি রঙে। মাঠভরা সোনালি ধান কেটে ঘরে তুলবেন তারা। সেই স্বপ্নে রঙিন হয়ে উঠেছে তাদের চোখেমুখে আনন্দের ছাপ।

জমিতে সঠিক সময়ে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ এবং নিয়মিত পরিচর্যার ফলে এবারের ইরি-বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন হবে রেকর্ড পরিমাণ।

বোয়ালখালী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বোরো মৌসুমে পৌরসভা ও উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে মোট ১ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ও উফশী জাতের ধান রয়েছে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার আমুচিয়া, শ্রীপুর-খরণদ্বীপ, করলডেঙ্গা, সারোয়াতলি ও শাকপুরা ইউনিয়নের মাঠগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি খেতে সবুজ ধানের শিষ উঁকি দিচ্ছে। কৃষকেরা জমিতে সেচ, সার প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার ও পার্চিংয়ের মাধ্যমে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

আমুচিয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. আব্দুল জলিল জানান, তিনি ১৬ একর জমিতে হাইব্রিড ৯৬, ৬৭, ১০০ ও নতুন (১০৮) জাতের ধান আবাদ করেছেন। গাছের বৃদ্ধি ভালো, শিষও সুন্দর। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি।

একই আশার কথা জানালেন কৃষক অমিয় বড়ুয়া, তৈয়ব চৌধুরী, মো. ইছাক, মফিজুল হক, নুনু বড়ুয়া ও এ্যান্থন বড়ুয়া। তারা বলেন, কৃষি অফিসের সহায়তা ও পরামর্শে এ বছর ধানের অবস্থা খুব ভালো।

সারোয়াতলি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা লক্ষণ কুমার কারন বলেন, “মাঠ পর্যায়ে আমরা নিয়মিত কাজ করছি। ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ বলেন, “সঠিক সময়ে চারা রোপণ, সময়মতো সেচ, নিবিড় পরিচর্যা ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর বোয়ালখালীতে বোরো ধানের ফলন আশানুরূপ হয়েছে। ধানে তেমন রোগবালাই নেই। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে। বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।”