চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) ভোরে এক ঘণ্টাব্যাপী এই ঝড়ে উপজেলার মঘাদিয়া ও ইছাখালী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার শতাধিক বসতঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঝড়ে উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা ও বিদ্যুৎ সরবরাহের খুঁটি। ফলে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে একাধিক এলাকায়। মঘাদিয়ার হাসিমনগর গ্রামে গাছ পড়ে একটি গরু নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঘাদিয়া ইউনিয়নের হাসিমনগর, মধ্যম মঘাদিয়া ও ইছাখালী ইউনিয়নের চরশরৎসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘরবাড়ির চাল উড়ে গেছে। তারেক স্টোর নামের একটি দোকানের উপর গাছ পড়ে দোকানটি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দোকানির দাবি, এতে তার প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
চরশরৎ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাদ উড়ে যাওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। একই এলাকার আবাসন প্রকল্পের ঘরের ছাদ উড়ে গেছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় উপজেলার বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, ‘সকাল ৬টার দিকে ঝড় শুরু হলে আমাদের গ্রামের বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাছ পড়ে রাস্তা ও বিদ্যুৎ খুঁটি ভেঙে পড়ে চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।’
ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদ মোস্তফা জানান, ‘আমার বসতঘরের চাল উড়ে গেছে। চারপাশে দোকানপাট ও বিদ্যুৎ খুঁটিও ভেঙে পড়েছে।’
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর মিরসরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম আদনান হোসেন জানান, ‘প্রবল বাতাসে মিরসরাই উপজেলার অন্তত ১৩টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। দ্রুত সংস্কারের কাজ চলছে।’
বারাইয়ারহাট জোনাল অফিসের ডিজিএম হেদায়েত উল্লাহ বলেন, ‘সোমবার সন্ধ্যায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করা গেলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় লাগবে।’
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ চলছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’