চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে তিন ইউনিটে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে পদবঞ্চিত বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় তারা অবৈধ পকেট কমিটি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার কয়েক হাজার নেতা-কর্মী বিক্ষোভে অংশ নেয়। বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই অংশে প্রায় ৩০ মিনিট যানজট ছিল।
ঈদের ছুটিতে ব্যস্ততম সড়কে এমন যানজট দেখে পথচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পদবঞ্চিত বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা দ্রুত মিরসরাই বিএনপির কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন করে কমিটি ঘোষণার দাবি জানান।
এর আগে, সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার স্বাক্ষরিত ৮৩ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এছাড়া ৩১ সদস্য বিশিষ্ট বারইয়ারহাট পৌরসভা ও ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির কমিটি ঘোষণার পর থেকে মিরসরাইয়ের বিভিন্ন স্থানে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। বিভিন্ন স্থানে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ৯ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। উপজেলার বারইয়ারহাট পৌরসভা, বামনসুন্দর বাজার, ঝুলনপোল বাজার, বড়তাকিয়া বাজার, আবুতোরাব বাজার ও মিরসরাই পৌরসভায় বিক্ষোভ মিছিল ও হামলার ঘটনা ঘটে।
পৌর বিএনপির নবনির্বাচিত সদস্য সচিব কামরুল হাসান লিটনের কার্যালয়ে হামলায় ৪ জন আহত হন। আহতরা হলেন— রাশেদ, সোহাগ, শাকিল। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তাননগর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কাটাছরায় হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শহীদ, যুবদল নেতা কামরুলসহ ৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য শাহীনুল ইসলাম স্বপন, ধুম ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মেজবাউল হক মানিক, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মাসুকুল আলম সোহান, যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম জাকারিয়া, করেরহাট ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব এয়াছিন মিজান, যুগ্ম আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবলু, হিঙ্গুলী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ছালেহ আহম্মদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক সোহাগ, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দিন, ওচমানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব ফরিদুল ইসলাম, ইছাখালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, দুর্গাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আজিজুল হক মেম্বার, বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম লিটন, কামরান সরওয়ার্দি, মঘাদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য শাহীনুল ইসলাম স্বপন বলেন, “ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর পকেট কমিটি ঘোষণা করেছেন। এদের বেশিরভাগ লোক এলাকায় থাকেন না, তারা ঢাকা-চট্টগ্রামে থাকেন। অবিলম্বে এই অবৈধ পকেট কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান জানান, “মিছিল নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ১০ মিনিটের জন্য সড়কে অবস্থান নিয়েছিলেন। তেমন যানজট সৃষ্টি হয়নি।”