সাপ দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে মেরে ফেলতে তৎপর হয়ে ওঠে মানুষ। সেই ভ্রান্ত ধারণা পাল্টে দিয়েছেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী যুবক আমীর হোসাইন শাওন। রাত-বিরাতে ফোন পেলে যেকোনো জায়গায় সাপ উদ্ধার করতে ছুটে যান শাওন। বিনিময়ে নেন না কোনো পারিশ্রমিক।
শাওন বলেন, গত তিন বছর ধরে “ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশ”-এর সাথে যুক্ত হয়ে সাপ উদ্ধার করতে প্রশিক্ষণ নেন।২০২৪ সাল থেকে তিনি একাই ১০-১১ প্রজাতির প্রায় শতাধিক সাপ উদ্ধার করে নিরাপদে অবমুক্ত করেছেন।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বোয়ালখালী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বোয়ালখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এলাকার আলী আহমদ কমিশনার সড়কের ওপর লোকালয়ে আসা ১২ ফুট লম্বা সাড়ে ১৭ কেজি ওজনের ১টি অজগর উদ্ধার করেন।এর আগে রাত ৮টার সময় উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মন্টু সওদাগর বাড়ির উঠোন থেকে সাড়ে ৪ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি শঙ্খিনী সাপ ও পাশ্ববর্তী এলাকার একজনের ঘর থেকে ২ ফুট লম্বা বিষধর ১টি পদ্ম গোখরা উদ্ধার করেছেন। উদ্ধারের পর বন বিভাগের লোকজনের সাথে সমন্বয় করে সাপগুলো অবমুক্ত করা হবে।
শুধু সাপ নয়, পাশাপাশি তক্ষক ও বানরও উদ্ধার করেছেন বলে জানান তিনি।শাওন বলেন, “সাপ অত্যন্ত সুন্দর প্রাণী হলেও আমাদের দেশে বেশ অবহেলিত। প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সাপের গুরুত্ব রয়েছে, সেটি কিন্তু আমরা বুঝি না। মানুষ যদি সাপ না মেরে আমাদের খবর দেয়, তাহলে আমরা সেগুলো উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করব।”
শুরুতে অনেকে তাকে ‘সাপুড়ে’ বলে ট্রল করলেও এখন তার কাজের প্রশংসা করেন সবাই।গ্রামের মানুষ এখন সাপ দেখলে মেরে না ফেলে তাকে খবর দেয়।
শাওন নগরীর ওমর গণি এমইএস কলেজ থেকে অনার্স পাস করে বর্তমানে চট্টগ্রাম কলেজে মাস্টার্স করার জন্য আবেদন করেছেন এবং ‘ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশ’-এর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।