মিরসরাইয়ে হারানো ঐতিহ্য ফেরাতে ঘুড়ি উৎসব

গ্রাম বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্যের অন্যতম একটি নাম ঘুড়ি। কালের বিবর্তনে এই ঐতিহ্য অনেকটা হারিয়ে গেছে। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ফেরাতে মিরসরাইয়ে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ঘুড়ি উৎসব। শুক্রবার (২ মে) বিকেলে মিরসরাই ক্যাফের উদ্যোগে ক্যাফে সংলগ্ন ফসলি মাঠে আয়োজিত ঘুড়ি উৎসবে বিভিন্ন ধরনের বাহারি ঘুড়ি নিয়ে উৎসবে অংশ নেন এলাকার শতাধিক মানুষ।

অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের নানা ধরনের চমকপ্রদ ঘুড়ি প্রদর্শনের মাধ্যমে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। উৎসব দেখতে ঢল নামে বিভিন্ন বয়সের শ্রেণী পেশার মানুষের। প্রদর্শিত ঘুড়ির মধ্যে ছিল, বাক্স ঘুড়ি, হন ঘুড়ি, তেলেঙ্গা, দুয়ারিয়া ঘুড়ি, পঙ্খিরাজ ঘুড়ি, তারা ঘুড়ি, ড্রাগন ঘুড়ি, প্রজাপতি ঘুড়ি, ঈগল ঘুড়িসহ নানা ধরনের বাহারি আকৃতির ঘুড়ি।

প্রতিযোগিতা শেষে দুটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ উচ্চতা ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হন মোহাম্মদ হাসান হন ঘুড়ি নিয়ে, সৌন্দর্য বর্ধন ক্যাটাগরিতে বিজয় হোন মোহাম্মদ শেখ জাহেদ চার বক্স ঘুড়ি নিয়ে।

ঘুড়ি উৎসব দেখতে আসা নজরুল গবেষক ডক্টর কামাল উদ্দিন বলেন, মিরসরাই ক্যাফের আয়োজনে ঘুড়ি উৎসব দেখে সেই শৈশবের স্মৃতি মনে পড়ে। বর্তমান প্রজন্মের শিশুদেরকে জিজ্ঞেস করা হয় ঘুড়ি কোথায় উড়ে, তারা কথায় বলবে বইয়ের মধ্যে উড়ে। কারণ পাঠ্য বইয়ে তারা যেটা পড়ে সেটা দেখে তারা পরীক্ষায় লিখে উত্তীর্ণ হয়। বাস্তবে ঘুড়ি উঠা থেকে তারা অনেক দূরে হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান প্রজন্ম মাদক এবং মোবাইলে আসক্ত হয়ে তাদের জীবন নষ্ট করে দিচ্ছে। দীর্ঘ বিরতির পর এগুলা আবারো দেখলাম। এজন্য আয়োজককে ধন্যবাদ জানাই।

আয়োজক কমিটির অন্যতম মহিবুল আরিফ বলেন, এটা হচ্ছে আমাদের দ্বিতীয় ঘুড়ি উৎসব। এবারের উৎসবে প্রায় শতাধিক প্রতিযোগি অংশ গ্রহণ করেন। গতবারের চেয়ে এবারের আয়োজন ব্যতিক্রমী কিছু জিনিস রাখা হয়েছে। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের মাঝে বাঁশি, চাউলের কড়ই এবং চাউলের গুঁড়ার লাউ। এবার প্রায় শতাধিক প্রতিযোগি ঘুড়ি উৎসবে অংশ গ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতা শেষে সর্বোচ্চ উচ্চতা ক্যাটাগরিতে বিজয়ী এবং সৌন্দর্য বর্ধন ক্যাটাগরিতে দুইজনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এছাড়াও সেরা ১০ জনকে মিরসরাইয়ানের লোগো সংবলিত টি-শার্ট বিতরণ করা হয়েছে।