গরু পালন করে চলে সংগ্রামী নারী ডেইজি আকতারের পরিবার

ছোট্ট একটি ঘরে গরু লালন পালন করেন ডেইজি আকতার। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী পৌরসভার উত্তর গোমদন্ডী ২ নম্বর ওয়ার্ডের আফজাল তালুকদারের বাড়িতে চার বছর ধরে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গরু কিনে মোটা-তাজা করে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে ডেইজির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের বসত ঘরের সাথে লাগোয়া ছোট্ট একটি কক্ষে লাল বাদামী রঙের ২ টি ষাঁড় গরু অতি যত্নে লালন পালন করছেন। গরু পালনের বিষয়টি জানতে চাইলে ডেইজি আকতার বলেন, প্রতি বছর ঈদের আগে বাজার থেকে দুইটি গরু কিনে আনেন তিনি। নিজ হাতে লালন-পালন করে, কৃত্রিম খাদ্য ছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে ঘাস খাইয়ে, যত্ন করে মোটা-তাজা করেন গরুগুলো। এরপর কোরবানির ঈদে সেগুলো বিক্রি করে যা লাভ হয়, সেই টাকা দিয়েই দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ আর সংসার চালায় তিনি।

এবছরও তিনি দুইটি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন। বাজারে গরু দুটি বিক্রি করতে পারলে তিনি প্রায় ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা পেতে পারেন বলে আশা করছেন। গরু দুটি কেনা হয়েছিল ১ লাখ টাকায়। তিনি বলেন, “এই লাভের টাকা দিয়েই সংসার চালাই, ছেলেদের পড়াশোনার খরচ দেই।”

প্রায় সাত মাস আগে তার স্বামী মারা যান। সেই ধাক্কা সামলাতে দুই সন্তানকে নিয়েই সামনে এগিয়ে চলার চেষ্টা তার প্রতিদিনের সংগ্রাম। বড় ছেলে আরফাত বর্তমানে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ছোট ছেলে রিফাত এইচএসসি পাস করে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ছেলের টিউশনি আর গরু লালনপালনই হচ্ছে জীবিকার অবলম্বন বলে জানান তিনি।

ডেজি আক্তারের ইচ্ছা, সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে তিনি তার খামারটিকে বড় পরিসরে রূপ দিতে চান। তিনি বলেন, “সাহায্য পেলে ৪-৫টি গরু রাখতে পারতাম, তাতে লাভও হতো বেশি, আর ছেলেদের ভবিষ্যতও একটু নিরাপদ হতো।

রিফাত বলেন, “মাকে প্রতিদিন গরুর দেখভাল করতে সাহায্য করি। ঘাস কেটে দেই, পানি দেই। মাকে একা কষ্ট করতে দেই না।”

এ বিষয়ে বোয়ালখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা এস.এম. সাইদুল আলম (সাঈদ) বলেন, “আমরা শুরু থেকেই ডেজি আক্তারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে আসছি।

গরু লালন পালনে বর্তমানে তিনি সফল। আমাদের প্রাণী সম্পদ ভেটেরিনারি হাসপাতালের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি।